মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহেবের ওপর আপনি যে শোক প্রস্তাব এনেছেন, তার প্রতি আমি আমার ব্যক্তিগত এবং দলের তরফ থেকে…
:: আলী রীয়াজ :: আমাকে কি কেউ বলতে পারেন যে করোনাভাইরাস টেস্ট কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করতে কত দিন লাগে? আমি…
:: মুজতবা খন্দকার :: হঠাৎ সেদিন ইউটিউবে সৃজিত মুখার্জির শাজাহান রিজেন্সি সিনেমাটা দেখে ফেললাম।ছবিটা ভালো না খারাপ সে প্রসংগে পরে…
শেখ সাহেবের চামচাদের মারফত কিছু সংখ্যক তথাকথিত বুদ্ধিজীবি ও অধ্যাপক শেখ সাহেবকে বুঝিয়েছিলেন যে, নজরুল একাডেমী দালালদের দ্বারা সংগঠিত।এর সম্পাদক কবি তালিম হোসেন পাকিস্তানের দালাল এবং এদেশে নজরুল একাডেমীর প্রয়োজন নেই। শেখ সাহেব কান কথায় নাচলেন। তিনি বিভিন্ন মহলে বলেছিলেন যে, তালিম হোসেনকে তিনি গ্রেফতার করবেন এবং নজরুল একাডেমী তিনি ভেঙ্গে দিবেন। খবরটি শুনে আমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারিনি। সোজাসুজি গণভবনে গিযে শেখ সাহেবকে নজরুল একাডেমী প্রতিষ্ঠার কারণ ও কার্যকলাপ সম্পর্কে তাকে সম্পূর্ণ ওয়াকেফহাল করলাম। শুধু তাই নয়, কবি নজরুলকে ঢাকায় আনার জন্য দাবী জানালাম। সঙ্গে সঙ্গে নজরুল জন্মদিবসে তাকে প্রধান অতিথি হওয়ার জন্য অনুরোধ জানালাম। শেখ সাহেব আমার অনুরোধ রক্ষা করতে স্বীকৃত হলেন এই শর্তে যে, প্রধান অতিথির ভাষণ যেন আমি লিখে দিই। আমি তার অনুরোধ রক্ষা করেছিলাম এবং যে ভাষণ লিখে দিয়েছিলাম, তাতে তার স্বাক্ষর গ্রহণ করেছিলাম। এরপর নজরুল একাডেমী থেকে তার অহেতুক ক্রোধ উপশমিত হল এবং কবি নজরুলকে ঢাকায় আনা হল। ধানমন্ডী এলাকায় একটি বিরাট প্রাসাদে কবিকে রাখা হয় এবং তার দেখা শোনা করার জন্য যথেষ্ট সুব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু শেষের দিকে শেখ সাহেবের নিজের হবু-জামাইয়ের জন্য বাড়িটি খালি করানো হয়, কবিকে পি.জি হাসপাতালের একটি কক্ষে রাখা হয় এবং এখানেই কবি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন॥” – মোহাম্মদ মোদাব্বের / সাংবাদিকের রোজনামচা ॥ [বর্ণমিছিল – সেপ্টেম্বর, ১৯৭৭ । পৃ: ৩৫০] অল্প কয়দিনের মধ্যেই গানটির হাজার হাজার রেকর্ড বিক্রি হয়। ভগবতী বাবুও…
:: ওয়াসিম ইফতেখার :: পাকিস্তান সৃষ্টির পর-ই ঐতিহাসিক ঢাকা নগরী-তে মি. জিন্নাহ যেদিন ঘোষণা করলেন ‘উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ সেদিন…
জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন যে তার জীবনের উপর সার্বক্ষণিক ঝুঁকি রয়েছে। স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে প্রবাসী সরকারের…
দেশ ছাড়ার আগে তাজউদ্দীন আহমদের সাথে একবার দেখা করা দরকার। সেপ্টেম্বরের একেবারে গোড়ায় গেলাম তাঁর কাছে। তিনি তখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন…
বর্তমান নতুন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ‘বুদ্ধিজীবীরা’ প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক কর্মধারায় (direct action) অত্যন্ত সক্রিয়, আর কল-কারখানার শ্রমিকেরা প্রায় সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। পূর্ববর্তী পর্যায়ে অবস্থা এর ঠিক বিপরীত ছিল। শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়া ‘জননেত্রী’ ও ‘দেশনেত্রী’ হওয়ার কিছু আগে থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে বুদ্ধিজীবীরা প্রাধান্য বিস্তার করতে শুরু করেন। অবশ্য এই বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে সৃজনশীলতা ও জ্ঞানানুরাগ দুর্লভ। লোক এদেরকে ‘ধান্দাবাজ বুদ্ধিজীবী’ বলে অভিহিত করে। আগে রাজনীতিকে কেন্দ্র করে শ্রমজীবীদের মনে অনেক আশা ছিল, কিন্তু বুদ্ধিজীবীদের মনে সংশয়, বিচার-বিবেচনা, দ্বিধা-দ্বন্ধ, বিরূপ সমালোচনা ও আশার অভাব ছিল। এখন রাজনীতিকে কেন্দ্র করে বুদ্ধিজীবীদের মনে সীমাহীন উৎসাহ দেখা যায়, কিছু বুদ্ধিজীবী ‘বুদ্ধিজীবীর অবস্থান থেকেও’ রাজনীতিবিদদের মতো দলীয় রাজনীতিতে সার্বক্ষণিকভাবে তৎপর – যা কিছুকাল আগেও ভাবা যেত না। আর রাজনীতি নিয়ে শ্রমজীবীদের মনে এখন কেবল বিচার-বিবেচনা, দ্বিধা-দ্বন্ধ, পিছুটান, আক্ষেপ, অনাস্থা, বিরূপ সমালোচনা ও হতাশা দেখা যায়। বৃহত্তর শিক্ষিতসমাজের আশান্বিত হওয়ার মতো কিছু কি ঘটছে দেশে? অনুসন্ধান করলে হয়তো দেখা যাবে, প্রত্যক্ষ দলীয় রাজনৈতিক কর্মধারায় বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা এখন যতটা কর্মতৎপর্, গোটা পৃথিবীতে আর কোনো দেশের বুদ্ধিজীবীরাই ততটা নন। প্রকৃতপক্ষে কোনো দেশের বুদ্ধিজীবীরাই এভাবে রাজনীতিতে তৎপর হন না। ১৯৮১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় থেকে বাংলাদেশের রাজনীতির গন্তব্য – সকলের অজান্তে – বুদ্ধিজীবীদের দ্বারাই নির্ধারিত হয়ে চলছে, রাজনীতিতে বুদ্ধিজীবীদের তুলনায় রাজনীতিবিদেরা এখন গৌণ। অনেকে বলে থাকেন, আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদীরা তাদের নিজেদের স্বার্থে এক শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে depoliticization-এর প্রক্রিয়া কার্যকর করছে। জেনারেল জিয়া নিহত হয়েছিলেন (১৯৮১) সেনাবাহিনীর কতিপয় লোকের দ্বারা। কিন্তু এর পটভূমি তৈরি হয়েছিল বুদ্ধিজীবীদের আন্দোলন দ্বারাই। নিহত হওয়ার অব্যবহিত পূর্ববর্তী মাসগুলোতে বুদ্ধিজীবীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্বে প্রায় প্রতিদিন সরকারবিরোধী মিছিল বের হত, আর বুদ্ধিজীবীদের অত্যন্ত উগ্র সরকার-বিরোধী বক্তৃতা-বিবৃতিও পত্রিকায় প্রকাশিত হত। বুদ্ধিজীবীদেরই এক অংশ ১৯৮১ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে আকস্মিকভাবে ‘নাগরিক কমিটি’ নামে এক দল গঠন করে তা থেকে জেনারেল ওসমানীকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দাঁড় করিয়েছিলেন। জেনারেল ওসমানী ছিলেন আওয়ামী লীগ জোটে, আগের বারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হয়েছিলেন। নাগরিক কমিটির বুদ্ধিজীবীরা সুকৌশলে তাকে আওযামী লীগ জোট থেকে সরিয়ে এনেছিলেন। এর দ্বারা ওই বুদ্ধিজীবীরা কি জাতির কোনো কল্যাণ সাধন করেছিলেন? না-কি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এরশাদের সামরিক শাসন জারির পটভূমি তৈরি করে দিয়েছিলেন? সাত্তার সরকারের আমলে ওই বুদ্ধিজীবীরা আরো বেশি সক্রিয় ছিলেন। জেনারেল এরশাদকে রাজনীতিতে উৎসাহিত করে তোলার ব্যাপারে তৎকালীন বিরোধী-দলীয় রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বুদ্ধিজীবীদেরও যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। ক্ষমতায় আসার অব্যবহিত আগে জেনারেল এরশাদ যখন সাংবাদিক সম্মেলন করে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে রাজনীতিবিদদের হুমকি দিয়েছিলেন, তখন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ড. আবু মাহমুদ সুদীর্ঘ বিবৃতি প্রচার করে ওই বক্তব্যকে অভিনন্দিত করেছিলেন। অবশ্য ড. মাহমুদ ওই সময়ে জিয়ার আমল থেকে সূচিত নতুন ধারার রাজনীতিতে কোনো প্রকার আস্থা স্থাপন না-করে ‘সংগ্রামী বুদ্ধিজীবীদের’ সংশ্রব ত্যাগ করে একলা চলার নীতি গ্রহণ করেছিলেন এবং একান্ত নি:সঙ্গ অবস্থানে থেকে করুণ মৃত্যু বরণ করেছিলেন। হয়তো তিনি মুনাফেকি পছন্দ করতেন না; তাই কপটতার আশ্রয় না-নিয়ে সরলভাবে মত প্রকাশ করেছিলেন। অনেকে যা গোপনে কিংবা ছল-চাতুরির মাধ্যমে করেছিলেন তিনি তা অকপটে প্রকাশ্যে করেছিলেন – পার্থক্য এখানেই। অবশ্যই উদ্দেশ্যের মধ্যেও পার্থক্য ছিল। ড. মাহমুদের মতো সরাসরি সমর্থন না-দিলেও ‘সংগ্রামী বুদ্ধিজীবীরা’ কি সেদিন তাদের কার্যকলাপ দ্বারা জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আসার পথ উন্মূক্ত করে দেননি? এরশাদ সরকারের উৎখাতও বুদ্ধিজীবীরাই ঘটিয়েছেন। জাতীয় কবিতা উৎসব পরিষদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, একত্রিশ বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠী, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী কমিটি, নাগরিক কমিটি (খান সারোয়ার মুরশিদের পৌরোহিত্যে ১৯৮৮ সালে গঠিত দ্বিতীয় নাগরিক কমিটি; তার আগে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধূরীর পৌরহিত্যে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন উপলক্ষে গঠিত নাগরিক কমিটি ওই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরেই অনানুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়), মুক্ত ফোরাম, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, আইনজীবী সমিতি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, সাংবাদিক সমিতি প্রভৃতি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সকার উৎখাতের প্রত্যক্ষ কর্মধারায় (direct action) যে সক্রিয়তার পরিচয় দিয়েছেন, তার এক-শতাংশ সক্রিয়তাও শ্রমিকেরা প্রদর্শন করেনি। বুদ্ধিজীবীদের নেতৃত্বে গত চৌদ্দ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতি সবসময়েই একদফা ভিত্তিক : সরকার উৎখাতের ও ক্ষমতা দখলের একদফা। রাজনীতি যতদিন রাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং বুদ্ধিজীবীরা প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বাইরে ছিলেন, ততদিন রাজনীতিতে জনসাধারনের উন্নতি সাধনের লক্ষে নানারকম কর্মসূচী প্রচারের নিয়ম ছিল। একটু পর্যবেক্ষন করলেই বোঝা যায়, এখন রাজনৈতিক আন্দোলন যে-নামেই পরিচালিত হোক, আর যে-বক্তব্যই প্রচার করা হোক, বুদ্ধিজীবীদের এবং নেতাদের বিশ্বস্ততা একটিমাত্র বিষয়ের প্রতি : ক্ষমতাসীন সরকারের উৎখাত সাধন এবং সম্ভব হলে নিজেরা ক্ষমতা দখল করা। জাতির উন্নত ভবিষ্যত গঠন সম্পর্কে তাদের কার্যকর কোনো চিন্তা-ভাবনার পরিচয় পাওয়া যায় না। তার ফলে গত চৌদ্দ বছর ধরে সরকার উৎখাতের সাফল্য ছাড়া এদেশের রাজনীতিতে অন্য কোনো অর্জন নেই। অবশ্য ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকেই অর্থ-বিত্ত, ক্ষমতা-প্রতিপত্তি ও খ্যাতি-প্রতাপ অর্জন করেছেন। নতুন ধারার রাজনীতির এই অর্জন দ্বারা কি মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও বিত্তহীন গতরখাটা উৎপাদনশীল ও সৃষ্টিশীল সাধারণ মানুষদের কোনো উপকার হয়েছে? ভবিষ্যতে কোনো উপকার হবে? রাজনীতিতে বুদ্ধিজীবীদের এই সক্রিয়তা ও প্রত্যক্ষ কর্মধারা (direct action) সমাজের কোন শ্রেণীর স্বার্থ হাসিল করছে? এর দ্বারা জাতি কোন নিয়তির দিকে এগুচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ, আণবিক শক্তিকেন্দ্র, বিজ্ঞান গবেষনাগার, বিআইডিএস, বাংলা একাডেমী, এশিয়াটিক সোসাইটি – বুদ্ধিজীবীদের এসব প্রতিষ্ঠান জাতিকে কোন উন্নতির পথ দেখাচ্ছে? এসব প্রতিষ্ঠানে বুদ্ধিজীবীদের কৃতিত্বই বা কতখানি? এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে মৃত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে বুদ্ধিজীবীদের এই সক্রিয়তা দ্বারা জাতির কি কল্যাণ সাধিত হচ্ছে? দেশবাসীকে, বিশেষকরে বৃহত্তর শিক্ষিত সমাজকে বিচার করতে হবে – এসব প্রশ্ন॥” – আবুল কাসেম ফজলুল হক / বাংলাদেশের রাজনীতিতে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ॥ কথাপ্রকাশ – ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ । পৃ: ৯৬-৯৮
সে সময় সেনা আমলাতন্ত্রের মধ্যে স্থায়ীভাবে দেশ শাসন করার খায়েশ তৈরি হয়েছিল। দেশের মানুষ এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ দামি মানতে পারেনি। তাই…
:: মাহফুজ উল্লাহ :: সদ্যপ্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ সর্বপ্রথম ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সাক্ষাৎকার গ্রহণ…